Showing posts with label ISLAM. Show all posts
Showing posts with label ISLAM. Show all posts

স্বপ্নে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়? (কুরআন ও সুন্নাহের আলোকে)

 স্বপ্নে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়?

স্বপ্নে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়?, স্বপ্নে মসজিদে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়, স্বপ্নে নামাজের ইমামতি করতে দেখলে কি হয়, স্বপ্নে শুয়ে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়, স্বপ্নে জুমার নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়, স্বপ্নে বসে নামাজ পড়া দেখলে কি হয়, স্বপ্নে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়, স্বপ্নে সিজদা দিতে দেখলে কি হয়?, স্বপ্নে নামাজ ও বিয়ে করতে দেখলে কি হয়

স্বপ্নে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়? এ বিষয়ে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। ইনশাআল্লাহ আজকের লিখাটি একটু হলেও আপনার উপকারে আসবে। অথবা এমন কোন তথ্য পাবেন যা হয়তো এর আগে আপনার জানা হয়নি। তো চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

যেহেতু, আমি লিখালিখিতে নিয়মিত না, এবং প্রথমবারের মতো ব্লগস্পট হেল্প বাংলা-তে লেখালেখি করছি তাই আমি এখানে আরো দুইটি বিষয় কভার করার চেষ্টা করবো। 
  • স্বপ্নে মসজিদে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়?
  • স্বপ্নে নামাজের ইমামতি করতে দেখলে কি হয়?
আমরা এই তিনটি স্বপ্নের ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করবো এবং বিশিষ্ট আলেমদের মতামত ব্যাক্ত করবো।সেই সাথে যদি এর পরে আবার লেখালেখি করি তখন অন্যান্য আরো অজানা বিষয় কভার করার চেষ্টা করবো।

স্বপ্ন কি?

বিজ্ঞানের ভাষায় স্বপ্ন বলতে বোঝায় কল্পনা যা আপনি মনে রাখতে পারেন না। অন্যদিকে অতিসাধারন অর্থে ব্যবহৃত স্বপ্নকে ভবিষ্যতের লক্ষ্য বোঝায়। কিন্তু ইসলামে স্বপ্নের একটা বিশেষ গুরুত্ব আছে। বিশেষে করে যখন নবীগণ স্বপ্ন দেখেন তখন সেটা হলো ওহি। 

উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, হযরত ইব্রাহিম আঃ এর স্বপ্ন ওহি ছিলো। পক্ষান্তরে স্বপ্নের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা থাকে। যেমন. হযরত ইউসুফ আঃ সবচেয়ে ভালো স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতে পারতেন।

আমাদের সমাজে স্বপ্ন নিয়ে নানন কুসংস্কারও আছে। যেমন অনেক ভন্ডপীর কিচ্ছা কাহিনি বানায় এ নিয়ে। সে সব না হয় পরে আলোচনা করা যাবে।

তবে, আমরা সাধারন মানুষ স্বপ্নে ওহি পায় না। আমাদের স্বপ্নগুলো হলোঃ ভবিষ্যতে ঘটতে যাওয়া কোন বস্তু অথবা সাধারন কল্পনা অথবা অতীতে রেখে আসা কোন স্মৃতি। আবার এমনও হতে পারে আমাদের স্বপ্নগুলো হয়তো কোন রূপক অর্থ বহন করে অথবা কোন উপমা।

আরও পড়ুনঃ
                        ১. রিদ্দার যুদ্ধের ইতিহাস
                        ২. যে আফসোস রয়েই যাবে
                        ৩. মৃত্যুর সময় কি হয়?
                        

রাসুল (সঃ) এর স্বপ্নের ব্যাপারে মন্তব্য

নবী করিম (সঃ) স্বপ্নের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ও বিস্ময়কর তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন স্বপ্ন তিন প্রকারঃ
  1. সুসংবাদ মূলক স্বপ্ন
  2. প্রতারণামূলক স্বপ্ন
  3. কল্পনা চিত্র।
সুবাহান আল্লাহ! 1400 বছর আগেই কোন রকম প্রযুক্তি বাদেই তিনি এই তথ্য দিয়ে গেছেন।

সুসংবাদ মূলক স্বপ্নঃ

সুসংবাদ মূলক স্বপ্ন সেই গুলো যার মাধ্যমে কোন ভালো কাজের সুচনা, বা ভবিষ্যৎবাণী দেখতে পাওয়া এই স্বপ্নের বৈশিষ্ট।

প্রতারণামূলক স্বপ্নঃ

এ জাতীয় স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে দেখানো হয়। বিশেষ করে যখন ফজরের ওয়াক্ত হয় তখন সে আপনাকে বলতে থাকে তোমার সামনে লম্বা রাত পরে রয়েছে। সুতরাং তুমি ঘুমাও। 

কল্পনা চিত্রঃ

এ জাতীয় স্বপ্ন আমাদের সাধারন কল্পনা।

উল্লেখ্যঃ যেই স্বপ্নগুলো ফজরের নামাজের আগে এবং তাহাজ্জুদ ওয়াক্তে দেখা যায় সেগুলোই সাধারনত সেগুলোর কিছু নির্ধারিত অর্থ থাকে। বিশেষত যারা পবিত্র থাকে এবং অজু অবস্থায় নিদ্রাগ্রহণ করেন তারা এমন স্বপ্ন দেখার ভাগ্যলাভ করতে পারেন।

এখন, আমরা মূল আলোচ্য বিষয়টি ব্যাখ্যা করি-

স্বপ্নে মসজিদে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়?

স্বপ্নে নামাজ পড়তে দেখা এই ব্যাখ্যায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে। যদি কেউ স্বপ্নে নামাজ পড়তে দেখে তাহলেঃ
  • হয়তো সে রোগাক্রান্ত হবে।
  • অথবা সে ধর্মের প্রতি উদাসীন হবে।
  • অথবা সে আল্লাহর রহমত লাভ করবেন।
আল্লাহ তালায় অধিকজ্ঞাত। আল্লাহ ছাড়া এ বিষয়ে কেউ সর্বাধীক জ্ঞান আর কারো নাই। সুতরাং আলোচনা করা বিষয়গুলো যে, সবই সত্য হবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। 

Read More:
                1. Best 5 VPNs For Netflix
                    2. Worker Insurance
                    3. Company Insurance
                    4. Side Hustle of ChatGpt

স্বপ্নে নামাজের ইমামতি করতে দেখলে কি হয়?

স্বপ্নে নামাজের ইমামতি করতে দেখলে হতে পারে হয়তো সেই ব্যাক্তি কোন নেতৃত্ব পাবেন। অথবা খুব শিঘ্রই কোন নেতৃত্বগ্রহণ করতে গেলেও এমন স্বপ্ন সে দেখতে পারে। আল্লাহ তায়ালায় অধিকজ্ঞাত। পুনরায় আমি এ কথারও নিশ্চায়তা দিচ্ছি না। বরং আমার আল্লাহ আমার থেকে বেশি ভালো জানেন।

শেষ কথা

স্বপ্নে নামাজ পড়তে দেখলে কি হয়- পর্বে এই ছিলো আজকের মতো। আশা করি কিছু না নতুন জানতে পেরেছেন। সেই সাথে স্বপ্নে ইমামতি করতে দেখলে এবং স্বপ্নে মসজিদে নামাজ পড়া দেখলে কি হয় সেই সম্পর্কে একটা বিস্তারিত প্রতিবেদন পেয়ে গেছেন। আমি আবারো বলছি যে, 100% নিশ্চায়তা আমি কোনটাতেই দেই নাই। তবে 50%-60% মানুষের সাথে উক্ত ঘটনা ঘটতে পারে। আল্লাহ তায়ালা অধিক জ্ঞাত। এছাড়া অন্য কোন প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে কমেন্ট করুন। খুব শিঘ্রই স্বপ্নের ব্যাখ্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে ইনশাআল্লাহ। 

লিখেছেনঃ মুহাম্মদ আলী

এছাড়া,আমাদের কন্টেন্ট গুলো ফেসবুকে পেতে অথবা এই কন্টেন্ট এর বিষয়ে কোন প্রশ্ন থাকলে সেখানে অথবা এই কন্টেন্ট এর নিচে করতে পারবেনঃ


© BlogSpot Help Bangla

সেল্ফ রুকাইয়া কাকে বলে? কিভাবে করবো? (কোরআন ও সুন্নাহের আলোকে)

সেল্ফ রুকাইয়া কাকে বলে? কিভাবে করবো?
রুকাইয়া চিকিৎসা, রুকাইয়া কী, রুকাইয়া চিকিৎসা pdf, রুকাইয়া গোসল করার নিয়ম, রুকাইয়া আয়াত সমূহ, সুরা রুকাইয়া, রুকাইয়া কেন করে, রুকাইয়া বই,নামাজ সম্পর্কে আমরা কতটুকু জানি? বদনজরের দোয়া রুকাইয়া আয়াত সমূহ, রুকাইয়া চিকিৎসা pdf, রুকাইয়া চিকিৎসা, রুকাইয়া কি, মানসিক রোগের রুকিয়া, রুকাইয়া গোসল করার নিয়ম, বদনজরের রুকাইয়া, সুরা রুকাইয়া, রুকাইয়া কিভাবে করবো, রুকাইয়া চিকিৎসা pdf, মানসিক রোগের রুকিয়া, সুরা রুকাইয়া, রুকাইয়া বই pdf download, রুকাইয়া আয়াত সমূহ, মৃত্যু ছাড়া সর্বপ্রকার রোগ থেকে মুক্তি লাভের জন্য যে দোয়া পাঠ করবেন, রোগ মুক্তির জিকির, করোনা রোগ মুক্তির দোয়া, কঠিন রোগ থেকে মুক্তির উপায়, দশটি রোগ থেকে মুক্তির দোয়া, রোগ মুক্তির দোয়া fb, রোগ মুক্তির প্রার্থনা, মা বাবার রোগ মুক্তির দোয়া

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার। আল্লাহ তায়ালার নামে শুরু লেখা করলাম। সাধারনত, নিজেই নিজের জন্য রুকাইয়া করাকে সেল্ফ রুকাইয়া বলে। এই প্রক্রিয়াই, প্রফেশনাল কোন রাক্বী, (যিনি রুকাইয়া করে থাকেন) বিশিষ্ট ওস্তাদ, ও চিকিৎসক ইত্যাদী ব্যাতিত ভালো ভাবেই নিজের রুকাইয়া করতে পারবনে। 

বিষয়টি আরেকটু ব্যাখ্যা করি। ধরুন আপনাকে কেউ যাদু করলো অথবা কোন জ্বীন আপনার ক্ষতি করার উদ্দ্যেশে আপনার উপর আসর করলো। সেই ক্ষেত্রে আপনি সেল্ফ রুকাইয়া করে নিজেকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। তবে এই ক্ষেত্রে আমরা আলোচনা করবো আপনি আক্রান্ত হওয়ার আগে কিভাবে নিজেকে রক্ষা করবেন।

এই একই পর্বে আলোচনা করবো যে আপনি যদি আক্রান্ত হয়েই যান তাহলে কিভাবে নিজেকে বাঁচাবেন। ইনশাআল্লাহ আজকের এই পর্ব থেকে সামান্য হলেও কিছু উপাকার পাবেন। আমরা দুটি অংশে এই আলোচনা শেষ করবো। আলোচ্য বিষয়গুলোঃ

  • আক্রান্ত হওয়ার আগে সেল্ফ রুকাইয়া (প্রটেকশন)
  • আক্রান্ত হওয়ার পরে সেল্ফ রুকাইয়া (প্রতিরোধ)

আক্রান্ত হওয়ার আগে সেল্ফ রুকাইয়া

আমাদের মধ্যে কেউ ই চাই না যে, কোন বিপদে পড়ি। অথবা আমাদের মধ্যে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না যে, নিজের প্রতিরক্ষা চাই না। আর তাই আমাদের উচিৎ প্রতিদিন সেল্ফ রুকাইয়া করা। 

সাধারনত, আপনি যদি প্রতিদিনের আমল (মাসনুন আমল) গুলো করেন তাহলে আপনার আর অতিরিক্ত কিছু করা লাগবে না। আপনি যদি তেমন কোন আমল না যানেন তাহলে পড়াশুনা করে এ বিষয়ে জানুন। তবে কোরআন হলো উত্তম আমল। 

আপনি চাইলে প্রতিদিন নামাজের পড়ে কোরআন থেকে কিছু আয়াত পাঠ করতে পারেন তবে সর্বোত্তম হবে যদি সূরা ফালাকসূরা নাস প্রত্যেক নামাজের পড়ে পড়তে পারেন।

আমাদের আরও কন্টেন্টঃ

প্রতিরক্ষা ও সুরক্ষা

সেল্ফ রুকাইয়া করার উপকার কি? এর উপকারিতা বুঝতে একটা উদাহরণ দেওয়া যায়। ধরুন আপনার শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। (আল্লাহ না করুক) এই ক্ষেত্রে সহজেই যেমন আপনার শরীরে রোগ-অসুখ বাসা বাধতে সাহস পাবে এবং আপনিও সহজেই গুরত্বর অস্বুস্থ্য হয়ে যেতে পারেন। 

তেমনি আপনার শরীরে যদি রুকাইয়ার প্রটেকশন না থাকে তাহলে আপনিও খুব সহজেই বদ নজর, জ্বীন দ্বারা আক্রান্ত এমনকি জাদু টোনার স্বীকার হতে পারেন। তাই আপনি যদি নিয়মিত সেল্ফ রুকাইয়া করতে থাকেন তাহলে ইনশাআল্লাহ আশা করা যায় আল্লাহ তায়ালার রহমতে, আপনি কোন রোগে আক্রান্ত হবেন না। তখন এটা প্রতিরক্ষা ও সুরক্ষা হিসেবে কাজ করবে।

কিভাবে সেল্ফ রুকাইয়া করবো? (আক্রান্ত হওয়ার আগে)

সাধারণত, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যদি আপনি অন্তত পড়েন তাহলে আপনি অনেকাংশেই নিরাপদ থাকবেন। এর পর যদি, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পড়ে সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করে, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান তাহলে  সেল্ফ রুকাইয়া হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

আশা করা যায় আল্লাহর রহমতে আপনি কোন রোগে আক্রান্ত হবেন না। এর পরে আপনি যদি ঘুমের সময়  সূরা ফালাক ও নাস পড়ে ঘুমের দোয়া পড়ে ঘুমান তাহলে সারাদিনের সমস্ত কিছু থেকে পরিত্রান পেতে পারেন ইনশাআল্লাহ।

আক্রান্ত হওয়ার পরে সেল্ফ রুকাইয়া

আক্রান্ত হওয়ার পরে যত দ্রুত সম্ভব কোন বিজ্ঞ আলিম/রাক্বী এর শরনাপন্ন হওয়া উচিৎ। কিন্তু আপনি যখন জানতে পারবেন যে, আপনি আক্রান্ত হয়েছেন তখন অবশ্য নিজেও রুকাইয়া করবেন।কারন অনেক সময় আক্রান্ত হওয়ার পরেও রাক্বীর শরনাপন্ন হতে দেরী হয়ে যায়। অর্থাৎ সাথে সাথেই আমরা রাক্বীর কাছে যেতে পারি না।

কিন্তু এই ক্ষেত্রে আপনি সেল্ফ রুকাইয়া করে নিজের আত্মরক্ষা করতে পারবেন। আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে একটি উদাহরণ তুলে ধরা হলোঃ
  • বদ নজর
বদনজর যদি লেগেই যায়, তাহলে আগে নিশ্চিত হতে হবে কার বদ নজর লেগেছে। এই ক্ষেত্রে আপনাকে মনে করতে হবে বিগত কিছুদিনের ঘটনা। কার নজর লেগেছে তা ভালোভাবে বুঝতে হবে। যদি আপনি খুঁজতে সক্ষম হোন তাহলে তাকে অজু করতে বলবেন, অথবা হাত ধৌাত করতে বলবেন । এর পরে ঐ পানি আপনি আপনার গায়ে ঢেলে নিবেন।

এর চেয়ে, যে কোন গুরুত্বর ব্যাপার পরিলক্ষিত হলে- অবশ্যই প্রফেশনাল রাক্বী এর শরণাপন্ন হবেন। 

আমাদের আরও কন্টেন্টঃ

শেষ কথা

সেল্ফ রুকাইয়া কাকে বলে ও কিভাবে সেল্ফ রুকাইয়া করবেন, সেই সম্পের্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি এখান থেকে সামান্য কিছু হলেও উপকার পেয়েছেন। যদি এ বিষয়ে আপনার কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে তা কমেন্টে করতে পারেন এবং কোন অজানা বিষয় জানার থাকলে আমাদের তথ্য সংগ্রহের সাইট জানতে চাই এ ভিসিট করুন।

ফেসবুকে আমাদের ইসলামিক কন্টেন্ট পেতে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজঃ


© BlogSpot Help Bangla

ইসলাম যখন শক্তি পেল। হযরত ওমর রাঃ ও হযরত হামজা রাঃ এর ইসলাম গ্রহণ।

ইসলাম কখন শক্তিশালী হলো?

ইসলাম যখন শক্তি পেলঃ ইসলামের রয়েছে বীরত্বময় ইতিহসা, যা ইতিহাসের পাতায় পাতায় লিপিবদ্ধ রয়েছে। হযরত আমির হামজা রাঃ এবং হযরত আলী রাঃ এর বদর যুদ্ধের বীরত্ব সবারই জানা আছে। তাছাড়া পরবর্তীতে হযরত খালিদ রাঃ এর ইরাক বিজয় এবং হযরত সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস রাঃ এর পারস্য বিজয় ইতিহাসে ইসলাম  সকলেরই জানা আছে।

তাছাড়া ইসলামের ইতিহাস  পড়লে এও জানতে পারবেন যে, মক্কার ১৩ বছরে কোন ধরনের যুদ্ধ নবীজী হযরত মুহাম্মদ সঃ করেন নি। কিন্তু মুসলিমদের উপর, নতুন ইসলামগ্রহণ করা সাহাবীদের উপর প্রচুর পরিমানে ‍জুলুম করতো মক্কার কাফেররা।


সূচিপত্র

{tocify}$title={Contents}

হযরত হামজা ইবনে আব্দুল মুত্তালিব রাঃ এর ইসলাম গ্রহণ

মক্কায় কাফেররা নতুন ইসলাম গ্রহণ করা সাবাহীদের খুব নির্যাতন এবং যুলুম নিপীড়ন করতো। অসহনীয় এবং অত্যাচারের মাধ্যমে মুসলমানদের অতিষ্ট করে তুলেছিলো। একদিন পাপিষ্ট আবু জেহেল হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে আঘাত করেন। এতে তিনি রক্তাক্ত হন।

নবীজীর আপন চাচা ছিলেন হযরত হামজা রাঃ। এছাড়াও কুরাইশদের মধ্যে যে কজন বীর পুরুষ ছিলেন তাদের মধ্যে তিনি একজন। কুস্তি, যুদ্ধ বিদ্যায় তিনি ছিলেন একজন অনুরাগী মানুষ। তিনি সিংহ শিকার করতে জানতেন। তিনি ছিলেন খুবই শক্তিশালী একজন পুরুষ।

একদিন তিনি সিংহ শিকার করে ফিরছেন এমতাবস্থায় কেউ একজন তাকে জানালেন যে, আপনার ভাতিজা হযরত মুহাম্মদ সঃ কে আবু জাহেল রক্তাক্ত করেছে।

হযরত হমজা রাঃ এই কথা শুনে রেগে গেলেন। এবং তিনি সোজা চলে গেলেন  আবু জাহেলের কাছে। আবু জাহেল তখন কাবা ঘরের পাশে বন্ধুদের সাথে ছিলেন। আগেই বলেছি হামজা রাঃ ছিলেন অকুতোভয় যোদ্ধা। আর তাই তিনি কাউকে ভয় করতেন না। তিনি আবু জেহেল কে আঘাত করলেন। (কোন বর্ণনায় আছে তিনি রক্তাক্ত হয়েছিলেন এবং কোন বর্ণানায় আছে শুধু আঘাতের কথা।)

এর পরে তিনি হযরত মুহাম্মদ সঃ এর কাছে গেলেন এবং বল্লেন এতদিন আমি আপনাকে আত্মীয়তার কারনে রক্ষা করতাম। এখন থেকে রক্ষা করবো ধর্মীয় কারনে। এর পরেই তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। ঐদিন ইসলামের ইতিহাসে এই বীরত্বগাথার গল্প শুরু হয়।

আরও পড়ুনঃ

হযরত ওমর রাঃ এর ইসলাম গ্রহণ

হযরত ওমর রাঃ দেখলেন পুরো মক্কা জুরে ভয়ঙ্কর অবস্থা। মক্কায় যেই ১৭-১৯ জন মানুষ পড়া লেখা করতে জানতেন তার মধ্যে হযরত ওমর রাঃ ছিলেন অন্যতম। তিনি ভাবলেন হযরত মুহাম্মদ সঃ কে হত্যা করলেই হয়তো এই সমস্যার সমাধান বের হবে। 

তিনি ঠিক করেই রেখেছিলেন যে, যদি তিনি নবী কে হত্যা করতে পারেন তাহলে তিনি নিজেকে কুরাইশদের বনু হাশিমের কাছে সপে দেবেন। কারন বনু হাশেম ছিলো নবীর গোত্র এবং হত্যার অপরাধে হত্যাকারীকে হত্যা করা ছিলো আরবের আইন।

কিন্তু তিনি হত্যা করতে পারলেন না। তার বোন ফাতিমা ও বোন জামাই ইসলাম গ্রহণ করেছে শুনে তিনি সেখানে যান। এবং আল্লাহ তায়ালা এখান থেকেই তার পরিবর্তন ঘটায়। এবং এর পরে তিনি নবীর কাছে গিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এছাড়াও হযরত মুহাম্মদ সঃ আল্লাহর কাছে তার জন্য দোয়া করেছিলেন।
 
আরও পড়ুনঃ

ইসলাম কখন শক্তি পেল?

হযরত ওমর রাঃ হযরত হামজা রাঃ দুইজন বীর পুরুষ ইসলাম গ্রহণ করার পরে ইসলাম শক্তি পেল।পরবর্তীতে তারা  ‍মুসলিমরা কাবা ঘরের সামনে প্রকাশ্যে নামাজ পড়তে শুরু করে।এর মাধ্যমেই ইসলামের মধ্যে শক্তি প্রকাশ পায়

কিন্তু হিজরত করার আগ পর্যন্ত নিরীহ মুসলিমদের উপর অন্যায় অত্যাচার চলতেই থাকে। অনেককে হিজরতের আগেই শহীদ করা হয় এবং অনেক সাহাবীকে হিজরত করতেই দেওয়া হয়নি। সর্বপরি সাহাবীদের জীবনের উৎসর্গের মাধ্যমে আমরা দ্বীন ইসলাম পেয়েছি। আল্লাহ সকলকে জান্নাত দান করুক, আমীন।

ইতিহাসে ইসলাম, ইসলামের ইতিহাস ১ম পত্র, ইসলামের ইতিহাস বাংলা, আদ জাতির উচ্চতা, বাংলাদেশে ইসলাম pdf, বাংলাদেশে ইসলাম বই, ইসলামের ইতিহাস জনক কে, ইসলামের ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর, ইসলাম যখন শক্তিশালী হলো, হযরত ওমর রাঃ ইসলাম গ্রহন, হযরত হামজা রাঃ এর ইসলাম গ্রহন

মসজিদের দায়িত্ব কারা পালন করবে? (তাফসীরে মাযহারী এর আলোকে)

 মসজিদের দায়িত্ব কারা পালন করবে?

মুসলিম ধর্মগ্রন্থ আল-কোরআনে সকল সমস্যার সমাধান দেওয়া আছে। অনেকে প্রায় সময় বলে থাকেন যে ধর্ম ধর্মের জায়গায় এবং অন্যান্য বিষয়গুলো তাদের জায়গায়। তারা আসলে মন থেকে বিশ্বাস করতে পারে না যে ইসলাম শুধু মাত্র একটা ধর্ম নয় বরং পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা।
পবিত্র গ্রন্থ আল-কোরআনে মসজিদের দায়িত্ব সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য আছে; যা হয়তো আমরা অনেকেই জানি না। মসজিদের দায়িত্ব সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা কিছু তথ্য দিয়ে রেখেছেন। সূরা তওবা তে বলা হয়েছে

إِنَّمَا يَعْمُرُ مَسَاجِدَ اللّهِ مَنْ آمَنَ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَأَقَامَ الصَّلاَةَ وَآتَى الزَّكَاةَ وَلَمْ يَخْشَ إِلاَّ اللّهَ فَعَسَى أُوْلَـئِكَ أَن يَكُونُواْ مِنَ الْمُهْتَدِينَ

 মসজিদের দায়িত্ব পালন করবে কারা?

নিঃসন্দেহে তারাই আল্লাহর মসজিদ আবাদ করবে যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিনের প্রতি এবং কায়েম করেছে নামায ও আদায় করে যাকাত; আল্লাহ ব্যতীত আর কাউকে ভয় করে না। অতএব, আশা করা যায়, তারা হেদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত হবে। [সুরা তাওবা - ৯:১৮]

এখানে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছেঃ
  • যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছে
  • যারা শেষ (তথা কিয়ামত) দিনকে বিশ্বাস করে
  • যারা সালাত কায়েম তথা প্রতিষ্ঠিত করে
  • যাকাত আদায় করে তথা নিজ সম্পদকে পবিত্র করে
  • এবং সর্বশেষ আল্লাহ ব্যাতিত কাউকে ভয় করে না।

এই ৫ টি বিষয় উল্লেখ করার পরে বলা হয়েছে -

”তাদের হেদায়াত সম্পর্কে আশাবাদী হওয়া যায়।”

মূলত এই ৫ টি বিষয় প্রত্যেক মুসলিমের মাঝে থাকা অত্যাবশ। এবং এমন মুসলিমদের মাঝ থেকেই মসজিদের দায়িত্ব প্রাপ্ত লোকগুলোকে অন্তর্ভূক্ত করা হবে বা তারাই দায়িত্ব প্রাপ্ত হওয়ার হকদার।
প্রথমত, অবশ্যই ঈমান থাকতেই হবে। যারা আল্লাহর প্রতি পূর্ণাঙ্গ ঈমান রাখে এবং
দিত্বীয়ত, যারা শেষ দিনকে বিশ্বাস করে।

শেষ দিবসে বিশ্বাস বলতে কি বুঝায়?

শেষ দিবসে বিশ্বাস মানে শুধু এইটা বিশ্বাস করা না যে একদিন কিয়ামত হবে। বরং অনেক বে ধর্মী ভাই বনেরাও এটা বিশ্বাস করে যে একদিন সব শেষ হয়ে যাবে। তাহলে তাদের বিশ্বাস আর আমাদের বিশ্বাস কি এক হয়ে গেল না?
বরং শেষ দিনকে বিশ্বাস করা বলতে বোঝায় হিসাব দিবস যেই দিন প্রত্যেককে তার হক যথাযথ ভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। আর যে শেষ দিবসে বিশ্বাস করে সে প্রতিনিয়তই তার থেকে আশ্রয় চাই আল্লাহর কাছে। ফলস্রুতিতে তারা পাপ কাজ ভয় পাই, নফসের উপর জুলুম করে না এবং বান্দার হক নষ্ট করে না। তারা এগুলো করার সাথে সাথেই অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে।

তৃতীয়ত, যারা সমাজে সালাত প্রতিষ্ঠা করে তারা মসজিদের দ্বায়িত্বে থাকবে। যারা সালাত প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করে মসজিদের দায়িত্বে থাকবে।

চতুর্থত, যারা আল্লাহকে ভয় করে যাকাত আদায় করে এবং নিজ সম্পদকে পবিত্র করে তাঁরা মসজিদের দায়িত্বে থাকতে পারবে।


যাকাত বলতে কি বুঝায়?

যাকাত বলতে শুধু লোক দেখানো লুঙ্গি, শাড়ী প্রদান করে থাকে এতের যাকাত আদায় হয় কি না হলেও কতটুকো আদায় হয় তার নিশ্চয়তা নাই।

পঞ্চমত, মসিজদ তারা আবাদ করবে যারা আল্লাহ ব্যতিত অন্য কাউকে ভয় করে না। আল্লাহ তায়ালা ব্যাতিত অন্য কাউকে ভয় করা যায়েজ নাই। বিশেষ করে যারা দুনিয়াতে দ্বীনি কাজ কর্মের আনজাম দিয়ে থাকে ব্যবস্থা করে থাকে তারা আল্লাহ ব্যাতিত আর কাউকে ভয় করবে না।

সাধারণত হারাম কে হারাম আর হালাল কে হালাল বলার সাহস থাকে না। আর তাই হারামকে হালাল আর হারামকে হালাল বানিয়ে দেয় অনেকে। কিন্তু এটা একদম ঠিক না। এটা এক প্রকার শির্ক। তাই যারা মসজিদের দায়িত্বে থাকবে তাদের মনে আল্লাহ ব্যাতিত অন্য কারো ভয় থাকবে না।

আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করার আরেকটি ব্যাখা হলো গোপনে ও প্রকাশ্যে সব সময় আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করা। আল্লাহকে যে ভয় করে, সে যেমন প্রকাশ্যে কোন খারাপ কাজ করতে পারবে না আবার সে গোপনেও কারো কোন ক্ষতি করবে না। কোন গোনাহের কাজ করবে না এবং আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করে চলবে।

শেষ কথা

সর্বপরি সূরা তওবার আয়াত নং- ১৮ অনুযায়ী মসজিদ সহ সকল দ্বীনি প্রতিষ্ঠানে যারা দ্বায়িত্বে এবং নেতৃত্বে থাকবে তারা এই পাঁচটি উপদেশ মেনে চলবে। কিন্তু একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের সবারই এই উপদেশগুলো মেনে চলতে হবে। শুধুমাত্র একজন পরিপূর্ণ মুসলিম মসজিদ আবাদ করতে পারবে।
(তাফসীরে মাযহারী এর আলোকে)

রুকাইয়া করার নিয়ম - (কোরআন ও সুন্নাহের আলোকে)

রুকইয়া  করার নিয়ম

এই পর্যায়ে আমরা রুকাইয়া করার নিয়ম নিয়ে আলোচনা করবো। এখানে রুকাইয়া কি? কত প্রকার, রুকাইয়া কেন করা হয়, রুকাইয়া করতে কি কি প্রয়োজন, বদনজরের রুকাইয়া,কোন কোন ক্ষেত্রে রুকাইয়া করা লাগে এবং কি কারনে রুকাইয়া করা লাগে তা নিয়ে বিস্তারিত। আশা করি নতুন কিছু শিখতে পারবেন অথবা বুঝতে পারবেন এবং করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। 

রুকাইয়াহ বা সেল্ফ রুকাইয়া কি?

প্রথমত, আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা বিভিন্ন রোগ,বদনজর, কালো জাদুর মধ্যে ভোগেন। কেউ কেউ এই সব কারনে অনেক মাজারে ,কবিরাজ,তান্ত্রিক এবং ভন্ড পীর এর শরনাপন্ন হন। অনেক কবিরাজ,তান্ত্রিক,মাজার পূজারীরা রোগীদের উপর কুফুরী করে রোগীদের জীবন নষ্ট করে দেয়।  (সেল্ফ রুকাইয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)

দ্বিতীয়ত, আমাদের মধ্যে অনেকেই জানেন না যে ইসলামে এই সকল রোগের চিকিৎসা অনেক আগে থেকেই আছে (প্রায় ১৪০০ বছর আগে থেকে) । ইসলামে এই সকল খারাপ কিছু থেকে মুক্তি পাবার জন্য কোরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী রুকইয়া করা হয়। 

সেল্ফ রুকাইয়া হলো কোন প্রফেশনাল কোন ওস্তাদ ব্যাতিত বা রুকাইয়া করতে জানে এমন কোন ব্যাক্তি ব্যাতিত নিজেই নিজের রুকাইয়া করে স্বুস্থ হওয়ার প্রক্রিয়া। এতে করে নিজেই নিজের সমস্যা অনুযায়ী রুকাইয়া করে স্বুস্থ হওয়া যায়।

রুকইয়াহ কী ? (সংঙ্গা)

ইসলামি ভাষাই রুকইয়াহ হলো কোনো ব্যাক্তি  কুরআনের আয়াত, দোআ কিংবা আল্ল-হ্‌ তাআলার নাম বা সিফাত বিশেষ কোনো উদ্দেশ্যে যেমনঃ অসুস্থার জন্য বা কোনো লক্ষ্য অর্জনের জন্য একমাত্র আল্ল-হ্‌ র সাহায্য চেয়ে পাঠ করে,সেটাকেই রুকইয়া বলা হয়।

রুকইয়াহ করার কারণঃ

শারীরিক, মানসিক, আত্নিক রোগের জন্য রুকইয়া করা হয়। তবে রুকইয়া মানে কোনো দ্রুত বিবাহের তাদবীর বা কোনো কাজ দ্রুত করা বা কোনো জাদুটোনা করে কারোর কোনো ক্ষতি সাধন করার মাধ্যম নয়। আর সেটা রুকাইয়া উদ্দেশ্যও নয়।

রুকইয়াহ করার মূল কারণ হচ্ছে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক একটি চিকিৎসা পদ্ধতি,যার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা করা হয়।

রুকইয়াহ জন্য কিছু প্রয়োজনীয় সূরাঃ

১। সূরা বাকারা

২। জাহান্নাম,গজব,আজাব সংক্রান্ত সূরা ও আয়াত ।

৩। যেসব সূরা ও আয়াতে সুস্থতার কথা বলা হয়েছে সে সকল সূরা গুলোকে রুকাইয়া আয়াত বা সূরা রুকাইয়া বলা হয়। যেমনঃ 

  • সূরা তাওবাহ এর ১৪ আয়াত
  • সূরা ইউনুস এর ৫৭ আয়াত
  • সূরা নাহল এর ৬৯ আয়াত
  • সূরা বনি ইসরাইল এর আয়াত ৮২
  • সূরা শুআরা এর আয়াত ৮০
  • সূরা হা-মীম সাজদা এর আয়াত ৪৪

এবং আরো অনেক সূরা। 

রুকাইয়া আয়াত সমূহ দেওয়া হলো

যুদ্ধ কর ওদের সাথে, আল্লাহ তোমাদের হস্তে তাদের শাস্তি দেবেন। তাদের লাঞ্ছিত করবেন, তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের জয়ী করবেন এবং মুসলমানদের অন্তরসমূহ শান্ত করবেন। (আত তওবাহ আয়াত নং- ১৪ )

হে মানবকুল, তোমাদের কাছে উপদেশবানী এসেছে তোমাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে এবং অন্তরের রোগের নিরাময়, হেদায়েত ও রহমত মুসলমানদের জন্য। (সূরা ইউনুস আয়াত নং- ৫৭)

ُمَّ كُلِى مِن كُلِّ الثَّمَرٰتِ فَاسْلُكِى سُبُلَ رَبِّكِ ذُلُلًا ۚ يَخْرُجُ مِنۢ بُطُونِهَا شَرَابٌ مُّخْتَلِفٌ أَلْوٰنُهُۥ فِيهِ شِفَآءٌ لِّلنَّاسِ ۗ إِنَّ فِى ذٰلِكَ لَءَايَةً لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ (সূরা আন-নাহল আয়াত নং- ৬৯)

 

ثوَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْءَانِ مَا هُوَ شِفَآءٌ وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ ۙ وَلَا يَزِيدُ الظّٰلِمِينَ إِلَّا خَسَارًا (সূরা বনি- ইসরাইল আয়াত নং- ৮২)

 

وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ (সূরা শু’আয়ারা আয়াত নং- ৮০)

 

وَلَوْ جَعَلْنٰهُ قُرْءَانًا أَعْجَمِيًّا لَّقَالُوا لَوْلَا فُصِّلَتْ ءَايٰتُهُۥٓ ۖ ءَا۬عْجَمِىٌّ وَعَرَبِىٌّ ۗ قُلْ هُوَ لِلَّذِينَ ءَامَنُوا هُدًى وَشِفَآءٌ ۖ وَالَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ فِىٓ ءَاذَانِهِمْ وَقْرٌ وَهُوَ عَلَيْهِمْ عَمًى ۚ أُولٰٓئِكَ يُنَادَوْنَ مِن مَّكَانٍۭ بَعِيدٍ (সূরা হা-মীম আস-সাজদাহ্ আয়াত নং- ৪৪)

সুরা রুকাইয়া, রুকাইয়া চিকিৎসা, রুকাইয়া গোসল করার নিয়ম, রুকাইয়া অডিও, রুকাইয়া কেন করে, রুকাইয়া বই, রুকাইয়া আয়াত সমূহ,

সূরা রুকাইয়া

১। তিন কূলঃ সূরা ইখলাস,সূরা ফালাক,সূরা নাস

  • সূরা আল-ইখলাস

قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ  اللَّهُ الصَّمَد لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُن لَّهُۥ كُفُوًا أَحَدٌۢ

  • সূরা আল-ফালাক 

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَق مِن شَرِّ مَا خَلَقَ وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ وَمِن شَرِّ النَّفّٰثٰتِ فِى الْعُقَدِ وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ

  • সূরা আন-নাস 

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ إِلٰهِ النَّاسِ مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ الَّذِى يُوَسْوِسُ فِى صُدُورِ النَّاسِ مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ
সুরা রুকাইয়া, রুকাইয়া চিকিৎসা, রুকাইয়া গোসল করার নিয়ম, রুকাইয়া অডিও, রুকাইয়া কেন করে, রুকাইয়া বই, রুকাইয়া আয়াত সমূহ,

২। চার কূলঃ সূরা কাফিরুন এবং সূরা ইখলাস, সূরা ফালাকসূরা নাস

  • সূরা কাফিরুন

قُلْ يٰٓأَيُّهَا الْكٰفِرُونَ لَآ أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ وَلَآ أَنتُمْ عٰبِدُونَ مَآ أَعْبُدُ وَلَآ أَنَا۠ عَابِدٌ مَّا عَبَدتُّمْ وَلَآ أَنتُمْ عٰبِدُونَ مَآ أَعْبُدُ لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِىَ دِينِ

৩। বিশেষ আট সূরাঃ

  • সূরা ইয়াসিন,
  • সূরা সফফাত,
  • সূরা দুখান,
  • সূরা জিন,
  • সূরা যিলযাল,
  • সূরা ইখলাস,
  • সূরা ফালাক,
  • সূরা নাস,
সুরা রুকাইয়া, রুকাইয়া চিকিৎসা, রুকাইয়া গোসল করার নিয়ম, রুকাইয়া অডিও, রুকাইয়া কেন করে, রুকাইয়া বই, রুকাইয়া আয়াত সমূহ,

আরও পড়ুনঃ
                        ১. রিদ্দার যুদ্ধের ইতিহাস
                        ২. যে আফসোস রয়েই যাবে
                        ৩. মৃত্যুর সময় কি হয়?

রুকইয়াহ এর স্তর-

আমরা রুকইয়াকে তিন স্তরে ভাগ করতে পারি। যেমনঃ 

প্রথমত, সর্বোত্তম রুকইয়াঃ রসূল (সাঃ) এবং সাহাবী রাঃ যেসব দো’আ এবং আয়াত দ্বারা রুকইয়াহ করেছেন।

দ্বিতীয়ত, উত্তম রুকইয়াঃ কুরআনে যে সকল আয়াত আক্রান্ত ব্যেক্তির সমস্যা সমাধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যশীল সে সকল আয়াত দ্বারা রুকইয়া করা।

যেমনঃ যাদুগ্রস্থ ব্যাক্তির জন্য সূরা আরাফ এর আয়াত ১১৭-১২২,সূরা ইউনুস এর আয়াত ৮১-৮২

তৃতীয়ত, বৈধ রুকইয়াঃ এছাড়া রসূল (সাঃ) এর হাদিসে বলা কিছু দোআ দিয়ে রুকইয়া করতে পারেন। নিজে থেকেও কিছু দোআ করা জাই তবে তা সরঈ বিধানের সীমারেখার মধ্যে থাকতে হবে ।

যেমনঃ সূরা ফাতেহা,সূরা ফালাক,সূরা নাস। আবার কুরআনে অথবা বিশুদ্ধ সূত্রে হাদীসে বর্ণিত অন্যান্য নবীগনের দোআ গুলো সর্বোত্তম রুকাইয়া’র অন্তর্গত।

আবার জীন আক্রান্ত ব্যাক্তির জন্য সূরা বাকারা এর আয়াত ১০২,সূরা জীন এর আয়াত ১-৯ আয়াতগুলো হলো উত্তম রুকাইয়া।

আবার বদনজর আক্রান্ত ব্যাক্তির জন্য সূরা ইউসুফ এর আয়াত ৬৭, সূরা কাহাফ এর আয়াত নং ২৯ এগুলো হলো বৈধ রুকাইয়া।

মাহরাম ব্যাতিত রুকাইয়া করার নিয়ম

কিছু ক্ষেত্রে আমাদের সামনে এমন পরিস্থিতি আসে যে, নন-মাহরাম (মাহরাম নয় এমন ব্যক্তি) এমন কারো রুকাইয়া করার প্রয়োজন হয়। 

রাসুল (সাঃ) এবং সাহাবীরা ছিলেন আমাদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ। দুনিয়া এবং আখিরাতের জন্য প্রতিটা মুমিনের তাদের অনুসরণ করা অপরিহার্য। তাই এবার আমরা এবার রসূল (সাঃ) ও সাহাবীদের রুকইয়া করার কিছু নিয়ম দেখবো।

আরও পড়ুনঃ

১। দোআ অথবা আল্ল-হ্‌র আয়াত তিলাওয়াত করা।                                                                          

যেমনঃ আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত জিবরীল (আঃ) রাসুল (সাঃ) এর কাছে এসে বললেন হে মুহাম্মদ, আপনি কী আল্ল-হ্‌ র কাছে আপনার সমস্যার ব্যাপারে অভিযোগ করেছিলেন? তিনি বললেন হ্যা। জিবরীল (আঃ) বললেন, (আমি আপনাকে আল্ল-হ্‌ র নামে রুকইয়া করছি-সেই সব জিনিস থেকে যা আপনাকে কষ্ট দিচ্ছে। সকল প্রাণের অনিষ্ট কিংবা হিংসুকের বদনজর থেকে আল্ল-হ্‌ আপনাকে আরোগ্য দান করুক; আমি আল্ল-হ্‌ র নামে রুকইয়াহ করছি)

২। রোগির মাথায় অথবা আক্রান্ত অঙ্গে হাত রেখে তিলাওয়াত করা। 

 রসূল (সাঃ) তাকে বললেন তোমার শরীরের যে জায়গায় ব্যাথা হয় তার উপরে হাত রেখে সাত বার বলবে (অর্থঃ আমি আল্ল-হ্‌ র সম্মান এবং তার ক্ষমতার আশ্রয় নিচ্ছি, যা আমি অনুভব করি এবং যা আমি আশঙ্কা করি, তার অকল্যাণ থেকে) ।

রুকইয়াহ এর কিছু উপকরণঃ

১। রুকইয়ার পানিঃ

সবচেয়ে উত্তম হলো যমযমের পানি। যমযমের পানির উপর রুকইয়ার আয়াত পড়লে এর উপকারিতা আরো বহুগুন বেড়ে যায়।

(আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে রসূল (সাঃ) বলেছেন,পৃথীবির বুকে সর্বোত্তম পানি যমযমের পানি, যাতে রয়েছে ক্ষুধার্তের জন্য খাদ্য এবং অসুস্থতার জন্য আরোগ্য।} 

তারপড়ে উত্তম হলো বৃষ্টির পানি। 

এই দুইটির কোনোটি না পালে সাধারণ পানি হলেও চলবে।

রসূল(সাঃ) চিকিৎসার জন্য সাধারণ পানি ব্যবহার করেছেন।

ব্যবহারঃ এই পানি সাধারণত পান করার জন্য এবং গোসল করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এ ছড়া এ পানি রোগীর গায়ে রুকইয়াহ চলাকালিন ছিটিয়ে দেওয়া হয়। এবং তাবিজ বা জাদুর কিছু পাওয়া গেলে এ পানিতে ডুবিয়ে নষ্ট করে দেওয়া হয়।

২। মধু ও কালোজিরাঃ 

আল্ল-হ্ সূরা নাহল এর আয়াত ৬৯ এ বলেছেন যে, 

ثُمَّ كُلِى مِن كُلِّ الثَّمَرٰتِ فَاسْلُكِى سُبُلَ رَبِّكِ ذُلُلًا ۚ يَخْرُجُ مِنۢ بُطُونِهَا شَرَابٌ مُّخْتَلِفٌ أَلْوٰنُهُۥ فِيهِ شِفَآءٌ لِّلنَّاسِ ۗ إِنَّ فِى ذٰلِكَ لَءَايَةً لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ

অর্থঃ

“তার (মৌমাছির) পেট থেকে বিভিন্ন রঙের পানিয় বের হয়, তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার” এবং (কালোজিরা) আবু হুরাইরাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা এই কালো বীজ (কালোজিরা) নিজেদের জন্য ব্যবহারকে বাধ্যতামূলক করে নাও। কেননা, মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের নিরাময় এর মধ্যে রয়েছে। ‘

আস-সাম’ অর্থ ‘মৃত্যু’। 

ব্যবহারঃ কালো জিরা সাধারনত মধুর সাথে খাওয়া হয়,তবে কালোজিরা শুধু চিবিয়েও খাওয়া যায়। এছাড়া কালোজিরার তেল খুবই উপকারী।

৩। যাইতুনের তেল ও খেজুরঃ 

আবূ উসাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা যাইতূনের তেল খাও এবং তা শরীরে মালিশ কর। কেননা এটি একটি কল্যাণময় গাছের তেল। 

ব্যবহারঃ রুকইয়াহ করার সময় যাইতুনের তেল শরীরে ও মাথায় মালিশ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এবং খেজুরঃ সাদ ইবনু আবি ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ (রসূল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যেক্তি সকাল বেলায় সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে সেদিন তাকে কোনো বিষ বা জাদু ক্ষতি করবে না)। 

যে কোনো উন্নত মানের আজওয়া খেজুর চিকিৎসার জন্য উপকারী হবে ইংশা আল্ল-হ্। রুকাইয়ার জন্য খুবই ভালো।

৪। সদকা করা ও দোআ করাঃ

আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূল (সাঃ) বলেছেন তোমাদের সম্পদ হেফাজত করো যাকাত প্রদানের মাধ্যমে, তোমাদের রোগের চিকিৎসা করো সদকার মাধ্যমে, আর তোমাদের বিপদ দূর করো দোআর মাধ্যমে।

ব্যবহারঃ রুকইয়াহ করার নিয়ম এর মধ্যে রুকাইয়াহ করার সময় রোগ মুক্তির জন্য দান-সদকা রোগীকে তারা তারী সুস্থ করে দিবে ইংশ-আল্ল-হ্। আর দোআ তো অবশ্যয় সবসময় করতে হবে। সবচেয়ে বেশি ভালো হয় আমাদের নবী যে সকল রোগ মুক্তির জন্য দোআ করেছেন সেগুলো করা। আবার নিজে থেকেও দোআ করা যায়।

 ৫। তাওবা বা ইস্তিগফারঃ 

বেশি বেশি ইস্তিগফার করলে মহান আল্ল-হ্ বিপদ, দুশ্চিন্তা ও অন্যান্য অনেক কিছু থেকে আল্ল-হ্ সহজেই মুক্তি দেন। কোনো পাপের কারনে যদি বিপদ আসে তবে তাওবা এর কোনো বিকল্প নেই। মহান আল্ল-হ, সূরা নূহ এর আয়ার ১০-১২ আর মধ্যে বলেছেন, অতঃপর বলেছিঃ তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের উপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দিবেন, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দিবেন, তোমাদের জন্যে উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্যে নদীনালা প্রবাহিত করবেন। 

ব্যবহারঃ বিপদের সময় নিজের আপরাধের জন্য প্রচুর পারিমানে তওবা করা উচিত। যেকোনো সময় যেখানে সেখানো তাওবা করে সময় টাকে অনেক মূল্যবান বানানো যায়। 

৬। রুকইয়ার তিলাওয়াতঃ 

রুকইয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি উত্তম নিজে কোরআন পাড়া । যদি তাও না পাড়ি তাহলে অন্য কোনো ব্যাক্তি কোরআন পাড়ে তার কাছে যাওয়া। তবে বেশির ভাগ মানুষ আছেন যারা ইউটিউব থেকে রুকইয়াহর ভিডিও দেখে রুকইয়া করে তা একেবারেই উচিত না। কারণ ইউটিউব এ ভুল তথ্য থাকে এবং বিভ্রান্তীকর তথ্য ছড়ানো থাকে। বেশ কিছু সময় ধরে আমাদের দেশের সাধারন মানুষ ইউটিউব দেখে বিভ্রান্ত হয়ে ছিলো এবং এর বিষাক্ততা আমাদের দেশের অলিতে গলিতে ছরিয়ে আছে। আবার অনেক এ জাদু টোনা করে তাই ইউটিউব দেখে রুকইয়া না করে নিজে কিংবা বিজ্ঞদের/ আলেমদের/ মুফতিদের/ মুহাদ্দিস এবং রাক্বীদের থেকে শেখায় ভালো। 

৭। রুকইয়ার গোসলঃ

রুকইয়াহ করা শেষ হওয়ার পরে রুকাইয়াহ গোসল করলে অনেক টা স্বস্তি বোধ হয় এবং শান্তি পাওয়া যাই। রুকইয়ার গোসল করার পদ্ধতি বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হাদিসে পাওয়া যায়।

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

“তিনি বলেন, যেই ব্যাক্তির বদনজর অন্য ব্যাক্তির উপর লাগতো, তাকে ওযু করার নির্দেশ দেওয়া হতো। এরপর ওই ব্যাক্তির অজু করা পানি দিয়ে সেই ব্যাক্তিকে (যার উপর নজর লেগেছে) গোসল করানো হতো, যার উপর বদনজর লেগেছে।“

অন্য আরেকটি সূত্রে বর্ণিত

একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাবিত ইবনু ক্বায়িস (রাঃ)- এর নিকট গেলেন। আহমাদ বলেন, তিনি তখন অসুস্থ ছিলেন। তিনি বলেনঃ হে মানুষের রব! সাবিত ইবনু ক্বায়িস ইবনু শাম্মাসের রোগ দূর করে দিন। অতঃপর তিনি বাতহান নামক উপত্যকার কিছু ধুলামাটি নিয়ে একটি পাত্রে রাখলেন এবং পানিতে মিশিয়ে তার দেহে ঢেলে দিলেন। 

বিভিন্ন যুগের আলিমদের মতে গোসলঃ

অয়াহাব ইবনুল মুনাব্বিহ (রহঃ) বলেছেন এমন ভাবে যে “ সাতটি বরইয়ের পাতা পিষে পানিতে দিয়ে নাড়তে থাকুন এবং আয়াতুল কুরসী, সূরা ফালাক, সূরা নাস পড়ে ফুঁ দিন তারপর সেই পানি তিন চুমুক পান করুন এবং বাকিটা দিয়ে গোসল করুন।

আবার কিছু-কিছু আলিম বলেছেনঃ 

পানিতে সূরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসী, সূরা আরাফ এর আয়াত ১০৬-১২২, সূরা কাফিরুন, ইখলাস (৩ বার, সূরা ফালাক ৩ বার, সূরা নাস ৩ বার সাথে পারলে আরো কিছু আয়াত ও দোআ পাঠ করা। 

শেষ কথা

রুকাইয়া করার নিয়ম নিয়ে আজকে এই পর্যন্তই। কোরআন ও সুন্নাহের আলোকে রুকাইয়া করার নিয়ম সমূহ বলে দেওয়া হয়েছে। যে কোন ধরনের সমস্যায় এই রুকাইয়া গুলো কাজে আসতে পারে। এছাড়া আপনার যদি বিশেষ কোন সমস্যা থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন সেই বিষয়ে রুকাইয়া সম্পর্কিত তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করবো।


রুকাইয়া বিষয়ক কোন সাহায্যের প্রয়োজন হলে আমাদের পেজটিতে মেসেজ দিতে পারেনঃ

 
এবং আমাদের কন্টেন্ট এর আপডেট ফেসবুকে পেতে আমাদের পেজটিকে লাইক দিয়ে রাখুন।

© Khondokar Kaium Ahmed

মৃত্যুর সময় কি হয়? মৃত্যুর লক্ষন কি কি? কোরআন ও হাদিস থেকে রেফারেন্স সহ।

মৃত্যুর আগে ১২ টি সংকেত, মৃত্যু কি এবং কেন, মৃত্যুর পর প্রাণীদের কি হয়, মৃত্যুর লক্ষণ কি কি, মৃত্যু কি সহজ, মানুষের মৃত্যু কেন হয়, মৃত্যুর সংকেত কি কি, মৃত্যু নিয়ে সমবেদনা,

মৃত্যুর সময় কি হয়

আসসালামুআলাইকুম, মৃত্যুর সময় কি হয়, মৃত্যুর লক্ষন কি কি তাই নিয়ে আজকের আয়োজন।প্রত্যেকটি প্রানীরই এক সময় মৃত্যু ঘটবে। মৃত্যু একটি নিশ্চিত বিষয়। যখন সময় আসবে তখন এক মিনিট আগেও হবে না বা এক মিনিট পড়েও হবে না। বরং মৃত্যুর সময় নির্ধারিত। মৃত্যুর সময় বেশ কিছু ঘটনা ঘটে যায় যার দ্বারা আমরা বুঝতে পারি যে মৃত্যু নিশ্চিত। আমার নিজের কথা নয়। কোরআন মাজিদে ্এই বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
 

মৃত্যুর আগের ১২টি সংকেত কথা কি ঠিক?

মৃত্যুর আগের ১২টি সংকেত অথবা ৪০ দিন আগে মানুষ মৃত্যু ঠিক পায় এমন অনেক কথা আমাদের সমাজের লোক জনের মুখে মুখে শোনা যায়। কিন্তু এগুলো কতটুকো ঠিক? আসলে এই কথা গুলোর কোন রেফারেন্স নেই।

বরং এগুলো কুসংস্কার হিসেবে আমাদের সমাজে বিরজমান আছে। মৃত্যুর আগের ১২টি সংকেত বা ৪০ দিন আগে মানুষ মৃত্যু ঠিক পায় এগুলো কোন কথার মধ্যেই পারে না। মৃত্যুর ১২ টি সংকেত, মৃত্যু বোঝা যায় এমন কোন কথা নেয় তবে কোরআন মাজিদের আয়াত থেকে মৃত্যুর সময়ের ০৬ টি লক্ষন বর্ণনা করবো।

সূচিপত্র

{tocify}$title={Contents}


মৃত্যুর লক্ষণ কি কি?

মৃত্যুর আগে তেমন কোন লক্ষন নেই, আর থাকবেই বা কিভাবে? এগুলো তো শুধু মাত্র ভবিষৎবাণী মাত্র। আর ভবিষ্যৎবাণী সম সময় সত্য হয় না। তাই আমরা মিথ্যার আশ্রয় নিতে চাই না বা কাউকে মিথ্যে তথ্যও দিতে চায় না।
  • মানুষ চলতে চলতে পা পিছলে পড়ে মৃত্যু বরণ করতে পারে
  • রাস্তায় হাটার সময় গাড়ীর সাথে দূর্ঘটনা জনিত কারনে মৃত্যু হতে পারে
  • মানুষ ঘুমের মধ্যেও মৃত্যু বরণ করে থাকে
তাই সমাজে যারা মৃত্যুর লক্ষন হিসেবে যেই সমস্ত কথা ছড়াই এগুলো মিথ্যে কথা বৈ কিছু নয়।

কোরআনে বর্ণিত মৃত্যুর কিছু লক্ষন

কোরআনে বর্ণিত মৃত্যুর সময়ের ০৬ টি লক্ষন বর্ণনা করবো। এগুলো মৃত্যুর সময় ঘটে তাই মিথ্যে ভবিষ্যৎবাণী নয়। তাই আমরা ছয়টি ধাপে সুন্দরভাবে এগুলো বর্ণনা করবো।

আরও পড়ুনঃ

১. ইয়ামাউল মাউত বা মৃত্যুর দিন

এই দিন মানুষের জীবনের সমাপ্তি ঘটবে এবং মৃত্যু হবে। হায়াত ফুরিয়ে যাবে। আল্লাহ তায়ালা মৃত্যুর ফেরেশতাদের নির্দেশ দিবেন জমিনে গিয়ে তার রুহুকে কবজ করে আনতে। এই দিন সম্পর্কে পৃথিবীর কেউ জানেনা। আর তাই যারা বলে মানুষ মৃত্যুর ৪০ দিন আগে সব বুঝতে পারে তারা মিথ্যে কথা বৈ কিছু বলে না। এটা একটা প্রতিষ্ঠিত ‍কুসংস্কার।

এমনকি কেউ যদি বিকেলে মৃত্যু বরণ করে সেই লোক সকালে এবং বিকেলেও সেই বিষয়ে অবগত হবে না। সময় যখন খুব কাছে চলে আসবে যখন পর্দা সরিয়ে ফেলা হবে তখন শুধু সে জানতে পারবে তার আগে নয়। কাজেই মৃত্যুর আগে ১২টি সংকেত, ১৫টি আলামত ৪০ টি লক্ষন এগুলো সব ভোকাস।

মানুষ তার মৃত্যুর দিন না জানা সত্ত্বেও কিছু শারিরীক পরিবর্তন উপলব্ধি করতে পারবে। মুমিন ব্যাক্তি খুব মনে খুব প্রশান্তি অনুভব করবে এবং সুখ অনুভব করবে। অর্থাৎ জান্নাতি ব্যাক্তি; দুনিয়াই যারা নেককাজ করতো এবং নেককারদের সাথে থাকতো। আল্লাহ তায়ালা আমাদের কে এমন মৃত্যু দান করুন। আমীন।

আর যারা পাপিষ্ঠ দুনিয়াতে খুব পাপ কাজ করেছে তারা বুকে খুব চাপ অনুভব করতে থাকবে। যেন মনে হবে তাদের বুকের উপর পাহাড় তুলে দেওয়া হয়েছে। এদের কাছেই মূলত আজাবের ফেরেশতা নিয়ে আজরাইল আঃ নাজিল হবেন। আল্লাহ এমন মৃত্যু থেকে আমাদের কে নাজাত দিক। আমীন।

ফেরেশতা নাজিল হওয়ার সময় দুষ্ট জিন এবং শয়তান ফেরেশতাদের দেখতে পারবে। কিন্তু মানুষ দেখতে পারবে না। কারন এখনো তাদের চোখের পর্দা সরে যায় নি।
 
এই দিনের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা কোরআনে ইরশাদ করেনঃ

তোমরা সেই দিন-কে ভয় কর যেই দিন তোমাদের কে ফিরিয়ে নেওয়া হবে আল্লাহর কাছে। অতঃপর প্রতিটি নফসকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে তাদেরকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে তাদের উপার্যন। আর কারও উপর জুলম করা হবে না। (সূরা বাকারা- ২:২৮১)

২. রুহ কবজ করার ধাপ

এই ধাপে রুহু বের হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে পড়বে। রুহু হাত, পা পায়ের গোছা নাভী এবং বুকের ওপর হয়ে অর্থাৎ পুরো শরীরের উপরের দিকে কন্ঠনালীর নিচের দুই কাধ পর্যন্ত বিস্তৃত হাড় এর কাছে অবস্থান করবে। এই হাড়দ্বয়কে তারাক্বী বলে। 

এই সময় মানুষ ক্লান্তি ও অস্থিরতা অনুভব করে। অস্থিরতা ও অসহনীয় চাপ অনুভব হয়। কিন্তু মানুষ তখনও জানতে পারে না বা বিশ্বাস করতে চায় না যে, তার রুহু বের হয়ে যাচ্ছে।

৩. তারাক্বী

তারাক্বী বলা হয় কন্ঠনালীর নিচে দুই কাধ পর্যন্ত বিস্তৃত হাড় কে। এখানে মানুষের রুহ এসে পৌছে যাবে। বের হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে। কিন্তু মানুষ তখনও বিশ্বাস করবে না যে তার মৃত্যু হয়ে যাবে। সে আবার জীবনে ফিরে আসার জন্য আশাবাদী হবে। কিন্তু তার এই আশা আর পূরণ হবে না। আল-কোরআনে এই পরিস্থিতি এভাবে বর্ণনা হয়েছে-

কখনো না, যখন প্রাণ কন্ঠাগত হবে, এবং বলা হবে কে ঝাড়বে? এবং সে মনে করবে বিদায়ের ক্ষণ এসে গেছে এবং গোছা গোছার সাথে জড়িত হয়ে যাবে। সেদিন আপনার পালন কর্তার নিকট সবকিছু নীত হবে। (সূরা কিয়ামাত- ২৬-২৫)

এখানে বলা হয়েছে প্রাণ কন্ঠাগত হবে অর্থাৎ তারাক্কী তে পৌছে গেছে। এবং বলা হবে কে ঝাড়বে কথাটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে তখন আত্মীয় স্বজন রা তারাহুরো করবে ব্যস্ত হয়ে যাবে তাকে নিয়ে। তখন তারা বলাবলি করবে কে তাকে সূরা/আল্লাহর কালাম পড়ে ঝাড়বে?

কেউ বলবে ডাক্তার ডাকো তাকে বাঁচানো সম্ভব হবে। কেউ বলবে ইমারজেন্সিতে কল করো। এক লোক হয়তো উঠে এসে বলবে তাকে কালেমা শাহাদত তাকলিন করাও (অর্থাৎ মনে করাও)। অথবা বলবে কে ভালো সূরা পড়তে পারো সে পড়ে তাকে ঝাড়-ফুক করো। একেই বলা হয়েছে কে ঝাড়বে?

সে মনে করবে বিদায়ের ক্ষণ এসে গেছে- অর্থাৎ সে মনে করবে তার মৃত্যু হয়ে যাবে কিন্তু নিশ্চিত হতে পারবে না। এই পরিস্থিতিতে মানুষ আবার প্রাণে ফিরে আসার আশঙ্কা করে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি মানুয়ের মৃত্যু তখন নিশ্চিত।

গোছা গোছার সাথে জড়িত হয়ে যাবে- অর্থাৎ পায়ের এক গোছা অন্য গোছার সাথে জরিয়ে যাবে। তার মৃত্যুর বিষয়টি এখন নিশ্চিত। গোছাদ্বয় এক হয়ে গেছে মানে এটাই তার শেষ দিন। এই অবস্থায় মৃত্যু থেকে কেও পালায়নও করতে পারবে না আবার প্রাণে ফিরেও আসতে পারবে না। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে গেছে।

সেদিন আপনার পালন কর্তার নিকট সবকিছু নীত হবে - সেদিন আল্লাহর কাছে রুহু ফিরে যাবে। আল্লাহর কাছেই মানুষ নত হবে। অর্থাৎ তার মৃত্যুর বিষয়টি এখন নিশ্চিত হয়ে গেছে।

৪. চতুর্থধাপ হুলকউম

মুত্যর কঠিন পর্যায় হলো হুলকউম। এটি মানুষের জন্য অত্বন্ত কঠিন স্তর। মৃত্যুর শেষ স্তর এখান থেকেই শুরু এবং আখিরাতের দর্শন এখান থেকেই শুরু। এই স্তরে মানুষের চোখের পর্দা সরিয়ে নেওয়া হয় এবং মানুষ ফেরেশতা সমূহকে দেখতে পারে। 

এই পর্দার কারনেই আমরা জীবিত অবস্থায় আমাদের আশেপাশের ফেরেস্তাদের দেখতে পারি না। কিন্তু মৃত্যুর সময় আল্লাহ তায়ালা আমাদের চোখের এই পর্দা সরিয়ে নিবন যার ফলে আমরা মৃত্যুর ফেরেশতাদের কে দেখতে পারবো।

সূরা ক্বফে আল্লাহ তায়ালা বলেন
আমি তোমার সামনে থেকে পর্দা সরিয়ে দিয়েছি, এখন তোমার দৃষ্টি প্রখর। (সূরা ক্বাফ- আয়াত নং- ২২)।

আল্লাহ তায়ালা এখন তার পর্দা সরিয়ে নিয়েছে। সে তার চারপাশের ফেরেশতাদের দেখতে পারছে। জীবনে কখনো মানুষ এমন অভিজ্ঞতার সামনাসামনি হয়নি। তাই এটি তার জন্য খুবই কঠিন সময় এবং কঠিন পরিস্থিতি। কিন্তু মানুষ এই অভিজ্ঞতা বিস্তারিতভাবে কাউকে বলে যেতে পারে না। আর তাই আমাদের সামনে অনেকের মৃত্যু হলেও আমরা মৃত্যু সম্পর্ক-এ বেশিরভাগ মানুষই উদাসীন।

মানুষ এই পর্যায়ে আল্লাহ তায়ালার কালাম দেখতে পারে এজন্য এই পরিস্থিতির নাম হুলকউম নাম করন করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র আল-কোরআনে এরশাদ করেনঃ

আর যখন প্রাণ কন্ঠাগত হয় তখন আমি তোমাদের অপেক্ষা তার অধিক নিকটর হয়ে থাকি। কিন্তু তোমরা তা দেখতে পাও না (সূরা ওয়াকিয়া- আয়াত নং- ৮৩-৮৫)

মূলত আল্লাহ তায়ালা তার নিকটতর হয় এবং আমাদের চোখের পর্দার কারনে আমরা তা দেখতে পাই না। কিন্তু মৃত্যুবরণ করা ব্যক্তিটি সব স্পষ্ট দেখতে পায়। কারন তার চোখের পর্দা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর এজন্যই এই পরিস্থিতির নামকরণ করা হয়েছে হুলকউম।

হয়তো সে আল্লাহ তায়ালার রহমত এবং তার কর্মের পুরুস্কার জান্নাত দেখতে পারছে নয়তো সে দেখতে পারছে আল্লাহ তায়ালার কঠিন আজাব ও গজব।

এই জন্য মানুষ যখন মৃত্যু বরণ করে তখন সে নির্দিষ্ট কোন একটি দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।

৫. মৃত্যুর পঞ্চম ধাপ

রুহ কবজের পরিস্থিতিটা অনেক কঠিন একটা পরিস্থিতি। এই ধাপে মানুষ তার করা সকল আমল দেখতে পায়। তার চোখের সামনে সব ভাসতে থাকে। তার আমল গুলো একে একে তার মনে পড়তে তাকে। এই সময় মানুষ আল্লাহ তায়ালার প্রতিশ্রুতি এবং ভীত দেখতে পায়। এই অবস্থায় মৃত্যুর ফেতনা ঘটে যায়।

এই ফেতনাতে শয়তান প্রবেশ করে। শয়তান সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে এই সময় মানুষকে বিভ্রান্ত করতে থাকে। অতীত জীবনের যে কোন দিনের চেয়ে শয়তান এই দিনে বেশি শক্তিপ্রয়োগ করে কারন এটিই মানুষের শেষ দিন।

শয়তান এইদিন সবচেয়ে কঠিন আঘাত হানে। আল্লাহর ব্যাপারে নবীর ব্যাপারে এবং দ্বিনের ব্যাপারে সন্দেহ সৃষ্টি করতে থাকে। এবং এটি এতো কঠিন ফেতনা যে মানুষ সচারচর এই ফেতনায় পতিত হয়ে যায় এবং মৃত্যুর সময় কাফের হয়ে যায়।

শয়তান তার নিকট আত্মীয়র রূপ ধরে তার কাছে আসে যে আগেই ইন্তেকাল করেছে এবং বলে যে আমি তোমার আগেই মৃত্যু বরণ করেছি, আল্লাহ তোমাদের যেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো তা মিথ্যা (নাউযুবিল্লাহ) তাই তুমি অস্বিকার কর।

এই সময় শয়তান সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করতে থাকে মানুষকে কাফের বানানোর। এবং মানুষ যখন অস্বীকার করে আল্লাহ তায়ালা এবং ইসলাম সম্পর্কে তখন সে পলায়ন করে। আল্লাহ তায়ালা এ ব্যাপারে কোরআনে বলে-

আর তাদের দৃষ্টান্ত শয়তানের মতো। যখন সে বলে কুফরি করো এবং মানুষ কুফরি করে তখন সে বলে তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক্য নেই। আমি বিশ্বপালন কর্তা আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করি। (সূরা হাশর আয়াত নং- ১৬)

নবিজী সাঃ আমাদের কে শয়তানের প্ররোচনা থেকে বাঁচার জন্য দোয়া শিখিয়েছেন। 

হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি কবরের শাস্তি থেকে, জাহান্নামের শাস্তি থেকে, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে ও দাজ্জালের ফিতনা থেকে।

হাদিসটি হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এই দোয়াটি পাঠ করতেন। (রেফারেন্সঃ সহিহ্ বুখারি শরিফ, হাদিস নং- ১৩৭৭)

এছাড়া দোয়াটি আল-কোরআনেও আছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেনঃ
বলুন হে আমার পালনকর্তা! আমি শয়তানের প্ররোচনা থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি (সুরা মুমিনুন আয়াত নং- ৯৭)
নবিজী সাঃ আমাদের কে শয়তানের প্ররোচনা থেকে বাঁচার জন্য দোয়া শিখিয়েছেন। এখানে জীবন ও মরনের ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য বলা হয়েছে। জীবনের ফিতনা হলো আমাদের চলার পথে শয়তানের প্ররোচনা। এই প্ররোচনার কারনে আমরা শয়তানের ফাদে পরে থাকি কু-কর্ম করে থাকি। নবিজী (সঃ) এই প্ররোচনা থেকেই আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতে বলেছেন।

আর পরবর্তী দোয়াটা হলো মৃত্যুর ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য। 

মৃত্যুর ফিতনা হলো শয়তানের প্ররোচনা যখন সে বলবে “আমি তোমার আগেই মরে গেছি, আমি দেখলাম আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য নয় নবী সত্য দ্বীন নিয়ে আসেনি, ইসলাম সত্যি নয়” নাউযুবিল্লাহ।  এই সময় মানুষ প্রতারিত হতে পারে। 

কুফরি করতে পারে। আর তাই রসুল (সঃ) এর শেখানো দোয়া গুলো যদি আমরা নিয়মিত আমল করতে পারি তাহলে আমরা ইনশাআল্লাহ  এই ফেতনা থেকে বেঁচে থাকতে পারবো।

৬. মৃত্যুর ষষ্ঠ ও শেষ ধাপ

এই ধাপে মানুষের রুহ ত্বারাক্কীর উপর অবস্থান করে বের হওয়ার জন্য নাকে, মুখে অবস্থান করতে থাকে। এই সময় রুহ আজরাইল আঃ এর নিকট আত্মসমর্পনের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। 

বান্দা যদি পাপিষ্ঠ হয় তখন আজরাইল আঃ বলতে থাকে হে পাপিষ্ঠ আত্মা, তুই বের হয়ে আয়া আল্লাহ তায়ালার ক্রোধের দিকে, বের হয়ে আয জাহান্নাম ও প্রতিশোধ পরায়ন আল্লাহর দিকে।

এই কথা শোনার পরে পাপিষ্ঠ ব্যাক্তি চিৎকার দিয়ে বলে উঠবেঃ হে আমার পালন কর্তা আমাকে পুনরায় দুনিয়াতে প্রেরণ করুন। যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি যা আমি পূর্বে করিনি। (সূরা মুমিনুন আয়াত নং- ৯৯-১০০)

অর্থাৎ তারা আফসোস করতে থাকবে। এমতাবস্থায় তাদের জন্য আল্লাহ তায়ালার কথা হলোঃ কখনোই নয় এতো তার কথার কথা মাত্র। (সূরা মুমিনুন আয়াত নং- ১০০) 

অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা ভালো করেই জানেন তারা যদি আবার দুনিয়াতে আসে তারা কখনোই তা করবে না। আর তারা আবারও কুফরি করবে এবং নানা রকম পাপ কাজে লিপ্ত হবে। আল্লাহ তায়ালা এই সব সম্পর্কে সর্বাধিক ভালো জানেন।

মৃত্যুর সময় নেককারঃ

নেককারের সামনে যখন মৃত্যু আসবে, যখন তার আত্মা প্রস্তুত হয়ে যাবে তখন আল্লাহ তায়ালার ফেরাশতা হযরত আজরাইল আঃ তাকে সুসংবাদ দিবেন জান্নাতের। বদকারের রুহু যেমন কষ্টের সাথে বের করা হয়েছিলো নেককারের রুহু তেমনভাবে বের হবে না।

তাদের কে জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হবে এবং বেশেস্তের খুশবু সহ রোমাল তাকে তার পুরুষ্কারের রেফারেন্স হিসেবে দেওয়া হবে। বিস্তুারিত সহিহ হাদিসে বর্ননা করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের এমন মৃত্যু দান করুক। আমীন।

এগুলোতো গেল মৃত্যুর ধাপ। এখন আসুন মৃত্যু সম্পর্কে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি।

মৃত্যু কি এবং কেন?

মৃত্যু হলো মানব জীবনসহ প্রত্যেক প্রাণীল শেষ অধ্যায়। অথবা জীবন নামের বইয়ের শেষ অধ্যায় এটি। সাধারণ ভাষায় মৃত্যু হলো একটি জীবনের শেষ অধ্যায় যার মাধ্যমে কোন প্রাণী দুনিয়ার জীবন শেষ করে থাকে!

কিন্তু এই শেষটা সবার জন্য সুন্দর হয় না। মৃত্যু এক এক জনের কাছে একেক রকম। মুমিনের জন্য মৃত্যু হলো “উপহার”। এর মাধ্যমে মুমিন বান্দা তার রবের সাথে সাক্ষাত করে। 

আর যারা মুমিন নয় তাদের জন্য মৃত্যু হলো ধ্বংসের শুরু। যারা দুনিয়ার জীবনে আল্লাহ তায়ালার আদেশ হুকুম ইত্যাদী অমান্য করেছে তাদের ধ্বংসের শুরু এখান থেকেই। তাদের আজাব চলতে থাকবে কিয়ামত পর্যন্ত এবং এর কোন শেষ হবে না।

তবে আল্লাহ তায়ালা যাকে ক্ষমা করবেন তার জন্য পুরো কবরের জীবনটা হবে শান্তিময়। এর পরে কিয়ামতের ময়দানে তাকে পুরোপুরি প্রতিদান দেওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালা তাকে সমাবেত করবেন। এর পরে সে আল্লাহর প্রতিশ্রুত জান্নাতে প্রবেশ করবে।

আর যারা আল্লাহ তায়ালার ক্ষমা হতে বঞ্চিত হবে তারা আল্লাহর গজবে পতিত হবে। তাদের জন্য ধ্বংস আর ধ্বংস সারাজীবনের জন্য। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেনঃ 

আর তাদের বলা হবে তোমরা প্রবেশ কর (জাহান্নামর দরজা দিয়ে)। সেখানে চিরকাল অবস্থানের জন্য।  (সূরা যুমার আয়াত নং- ৩৯:৭২)

আল্লাহ তাদের জাহান্নামে চিরকাল শাস্তি দেবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের জাহান্নামের আগুন থেকে নাজাত দিক। আমীন।

মৃত্যু কি সহজ?

মৃত্যু কি সহজ? “হ্যা মুমিনদের জন্য মৃত্যু সহজ” আর কাফেরদের জন্য মৃত্যু অনেক কঠিন। কাফেরদের মৃত্যুর সময় আজাব হয়, শাস্তির ফেরেশতারা তার চারিদিকে দেখতে পায়। তখন তার জন্য সেটা একটা কঠিন পরিস্থিতি হয়ে দাড়ায়।

কিন্তু মুমিন ব্যাক্তির জন্য মৃত্যু একটি উপহার। সে সবসময় এই উপহার পেতে চায়। আর তাই মুমিন ব্যাক্তির দুনিয়ার প্রতি আকর্ষণ তেমন থাকে না। তারা আল্লাহ তায়ালার সাথে মিলিত হওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকে। দুনিয়া থেকে তারাতারি বিদায় নিয়ে আল্লাহ তায়ালার প্রতিশ্রুত জান্নাতের দিকে পারি জমাতে চায়। তাই মৃত্যু হলো মুমিনদের জন্য উপহার।

কিন্তু কাফেরদের জন্য মৃত্যু সহজ নয়। কারন এরা দুনিয়াতে সর্বদা বিপর্যয় সৃষ্টি করে। নানান প্রকার পাপ কাজ, অকাজ, কুকর্ম এবং কুশিক্ষার প্রচলন করে যায়। আর কাফের বলতে শুধু বেধর্মীদের বোঝায় তা নয়। মুমিনদের অনেক ব্যক্তিও কাফের হয়ে যায় অনেক সময়।

তবে এই ক্ষেত্রে বোঝার বিষয়টি হলো এই যে, মানুষ কখন কাফের হয়? মানুষ কুফরী তথা অবিশ্বাসের মাধ্যমে কাফের হয়ে যায়। আবার অনেক ব্যাক্তি কাফের থেকে মুমিন হয় এবং আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত এর মাধ্যমে পুরুষকৃত হয়।

তবে কে কাফের কে মুমিন এইটা আপনি কখনোই বিচার করতে চেষ্টা করবেন না। এটা একমাত্র আল্লাহ তায়ালা জানেন। তবে সব সময় চেষ্টা করবেন ভালো ভালো মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করার জন্য। কারন কিয়ামতের দিন আপনাদের বন্ধুদের সাথে এবং আপনার ইমামের সাথে আপনার বিচার হবে এক পর্যায়ে।

তো আমরা এই প্রশ্নের (মৃত্যু কি সহজ?) উত্তরে বোঝা গেল উত্তর হবে দুই রকমের। একটা আমরা যারা মুমিন আছি তাদের জন্য মৃত্যু হলো সহজ।

আর আমাদের মধ্যে যারা কাফের  তাদের জন্য মৃত্যু অনেক কঠিন। 

তবে এখানে আমরা মাপকাঠি হিসেবে মৃত্যুর সময়ের কষ্টকে বিবেচনা করবো না। কারন এমনও হতে পারে কারও মৃত্যুর সময় অনেক কষ্ট হলো আর এর বিনিময়ে তার মৃত্যুর পরবর্তীতে আজাব মাফ হয়ে গেল।

তবে মৃত্যু অবশ্যই একটি কঠিন বিষয়। আমাদের সবাইকে এই কঠিন মূহূর্তটি পার করে আসতে হবে। আর তাই এর প্রস্তুতি আমাদের সকলের থাকা উচিৎ।

মৃত্যুর মাধ্যমে শুরু হয় কবর এর জীবন বা আখিরাতের প্রথম ধাপ। আমরা প্রথম সময়ে রুহের জগতে ছিলাম। তার পরে মায়ের পেটের জগতে। এখন দুনিয়াই আছি। এর পরে মৃত্যুর জগত তার পরে কিয়ামত এবং এর পরে সর্বশেষ আমাদের চুড়ান্ত ফলাফল জান্নাত অথবা জাহান্নাম।

মৃত্যু সহজ অথবা কঠিন বিবেচনা করার ক্ষমতা আমাদের নেই তবে এইটা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, মুমিন ও কাফের দুইজনার জন্য আলাদা আলাদা স্বাদ হবে মৃত্যুর। তবে একজন মানুষ হিসেবে মৃত্যুকে ভয় করা উচিৎ না। কারন এটা নিশ্চিত যে আমাদের মৃত্যু হবে কিন্তু অনিশ্চিত কখন হবে। 

মৃত্যুর পর প্রণীদের কি হয়?

মৃত্যুর পরে প্রাণীদের কি হয় তা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় না। কারন মৃত্যুর পরে আবার কেউ উঠে এসে তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে পারে না। আর তাই আমাদের সমাজে এই নিয়ে নানান বিভ্রান্তি রয়েছে আমাদের সমাজে। আসলে সঠিকভাবে এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় না।

তবে মৃত্যুর পরে মুমিনদের কিয়ামত পর্যন্ত শান্তির ঘুম এবং পাপিষ্ঠদের জন্য কিয়ামত পর্যন্ত শাস্তি পেতে থাকবে। 

শেষ কথা

“মৃত্যুর  সময় কি হয়” মৃত্যু নিয়ে এমন হাজারো কথা আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে। আসলে কোনটি ঠিক এবং কোনটি ঠিক আমরা তা হারিয়ে ফেলেছি নানান কুচক্রি জাল কথা বার্তার ভিরে। তাই বেদ’আত সহজে আমাদের মনে বাসা বাধে এবং মৃত্যুর আগে ১২ টি সংকেত, মৃত্যু কি এবং কেন, মৃত্যুর পর প্রাণীদের কি হয় এবং মৃত্যুর লক্ষণ কি কি এমন হাজারো প্রশ্ন আমাদের মনে উঁকি দেয়। আমি চেষ্টা করেছি যথাসম্ভব রেফারেন্স সহ আপনাদের সামনে সত্যটি উপস্তাপন করতে। এর পর থেকে মৃত্যু সম্পর্কিত এবং ইসলামের অন্যান্য যে কোন বিষয় জানার জন্য কোরআন ও হাদিসের রেফারেন্স এর উপর নির্ভর করবেন।

আরও পড়ুন