জাহান্নামীদের ০৭ ধরনের খাদ্য।। জাহান্নামের ভয়ঙ্কর ও যন্ত্রনাদায়ক খাদ্য।।

"Keyword" "জাহান্নামের স্তর কি কি" "জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি pdf" "জাহান্নাম সম্পর্কে কোরআনের আয়াত" "জাহান্নামের খাবার" "জাহান্নামে কারা যাবে" "জাহান্নামে যাওয়ার কারণ" "হাদিদ’ শব্দের অর্থ কী?" "জাহান্নামীদের খাবার" "জান্নাতের আয়াত" "সূরা আলে ইমরানের চতুর্থ ভাষণ কখন নাযিল হয়?"


সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ

আমরা কেউ জাহান্নামে যেতে চাইনা। আমরা সকলেই আল্লাহ তায়ালার কাছথেকে ক্ষমা প্রার্থনা করি। এই জন্য আমাদের উচিৎ বেশি বেশি করে তওবা করা, ক্ষমা চাওয়া। রাসুল সঃ বলেন কেউ যদি মন থেকে আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করে যে, হে আল্লাহ আমি জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাই ০৩ বার বলে তাহলে তার জন্য জাহান্নাম হারাম হয়ে যায়। তাই আমাদের উচিৎ প্রতিবার নামাজ শেষে আল্লাহ তায়ালার কাছে এই দোয়া করা। আল্লাহ তায়ালা পরম ক্ষমাশীল। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকল গোনাহ মাফ করে দিক.., আমিন।

আল্লাহ তায়ালা দোযখ সৃষ্টি করেছেন আল্লাহর বিধান অমান্যকারী, শিরক কারী জুলুম কারী ইত্যাদী বিভিন্ন শ্রেণীর লোক যারা পাপাচার করেছে এবং আল্লাহ তায়ালা ও তার রাসুলের বিরুদ্ধে কথা বলেছে, কাজ করেছে তাদের শাস্তির জন্য। এখানে থাকতে হবে চিরকাল থাকতে হবে।

জাহান্নামের খাদ্য মানে যে তাদের আহার করার বস্তু এমনটা নয়। বরং আল্লাহতায়ালা জাহান্নামীদের খাদ্য, পানি সহ সবকিছুই তাদের শাস্তির জন্য তৈরি করেছেন। এগুলো হলো তাদের শাস্তির অংশ। জাহান্নামের আগুন কখনো নিভবে না। এর অধীবাসিদের চিরকাল আজাব ভোগ করতে হবে। তারা সাহায্য চাইবে, চিৎকার করতে থাকবে কিন্তু কখনো তাদেরকে সাহায্য করা হবে না।

তারা যখন খাবার ও পানি চাইবে তখন তাদের সামনে এমন খাবার উপস্থিত করা হবে যাতে তাদের আজাব আরো বৃদ্ধি পায়। এই খাবার ‍গুলো হবে যন্ত্রনাদায়ক খাবার। 

জাহান্নামের খাদ্যগুলোঃ

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র আল ‍কুরআনে জাহান্নামিদের সাত ধরনের খাবারের কথা উল্ল্যেখ করেছেন। সেগুলো হলোঃ

  • হামিম
  • গাসসাক
  • সদিদ
  • গাদের মত পানি
  • দড়ি
  • গিসলিন
  • যাক্কুম

খাদ্যের বিবরণঃ

হামিমঃ
হামিম জাহান্নামের আগুনে ফুটানো গরম পানি। এই পানি পান করার ফলে জাহান্নামিদের পেটের ভিতরের সবকিছু গলে তরল পানির মতো পড়ে যাবে। 

আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
এবং যাদের পান করতে দেওয়া হবে ফুটন্ত হামিম পানি যা তাদের নাড়িভুঁরি ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দিবে। (সূরা মুহাম্মদ আয়াতঃ ১৫)

গাসসাকঃ
গাসসাক হলো অতিরক্ত এবং বিষাক্ত করমের ঠান্ডা ও পান করার অযোগ্য পানি। এই পানি অধিক ঠান্ডা বলেই পান করার যোগ্য না।

আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
এই হচ্ছে হামিম ও গাসসাক অঃতপর তারা  আস্বাদন করুক। (সূরা সাদ আয়াতঃ ৫৭)

সদিদঃ
সদিদ হলো পরকালে জাহান্নামে শাস্তিরত কাফেরদের গলিত হয়ে পড়া চামড়া ও গোস্ত এর পুঁজ। কাফের রা অনন্তকাল জাহান্নামে থাকবে। সেখানেই তাদের স্থায়ী ঠিকনা। জাহান্নামের আগুনে তাদের চামড়া গুলো গোস্ত গুলো পুড়ে গলে অত্যন্ত দূর্গন্ধ ও ঘন হবে। এই দুর্গন্ধময় পুঁজ-ই সদিদ। এইগুলো জাহান্নামিদের সামনে উপস্থিত করা হবে।

পবিত্র আল-কোরআনে আল্লাহ তায়াল বলেনঃ

তাদের প্রত্যেকের জন্য পরিনামে জাহান্নাম রয়েছে এবং পান করানো হবে গলিত পুঁজ যা তারা খাওয়ার পরে মৃত্যু যন্ত্রণা অনুভব করবে। কিন্তু তাদের মৃত্যু ঘটবে না। এবং এরর কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে। (সূরা ইব্রাহিম, আয়াতঃ ০-১৭)

 

"Keyword" "জাহান্নামের স্তর কি কি" "জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি pdf" "জাহান্নাম সম্পর্কে কোরআনের আয়াত" "জাহান্নামের খাবার" "জাহান্নামে কারা যাবে" "জাহান্নামে যাওয়ার কারণ" "হাদিদ’ শব্দের অর্থ কী?" "জাহান্নামীদের খাবার" "জান্নাতের আয়াত" "সূরা আলে ইমরানের চতুর্থ ভাষণ কখন নাযিল হয়?"


আরও দেখুন
গাদের মতো পানিঃ
জাহান্নামীরা যখন আজাব ভোগ করতে করতে তৃষ্ণার্থ হয়ে পড়বে তখন তারা পানি চাইবে। যখন তারা পানি চাইবে তখন  এই গাদের মত পানি তাদের কে দেওয়া হবে তারা পান করবে এবং তাদের মুখমন্ডল এই পানি পান করার সঙ্গে সঙ্গেই ঝলসে যাবে। এই পানি জাহান্নামীদের কে বাধ্য করে খাওয়ানো হবে। 

এই ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ

আমি প্রস্তুত করে রেখেছি অগ্নি। যার বেষ্টনী তাদের পরিবেষ্টন করে রাখবে। তারা পানি চাইলে তাদের দেওয়া হবে গলিত ধাতুর পানি। যা তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে। এটা নিকৃষ্ট পানি। আর জাহান্নাম কত নিকৃষ্ট আশ্রয়। (সূরা কাহফ আয়াতঃ ২৯)

দড়িঃ
শুনতে আশ্চর্য্য লাগলেও এইটা সত্যি যে জাহান্নামিদের খাওয়ার জন্য দড়ি উপস্থাপন করে হবে। তবে এটা সাধারন দড়ি নয়। এই দড়ি এক ধরনের বিষাক্ত কাটা। এর দ্বারা জাহান্নামীদের ক্ষুধা নিবারণ হবে না। জাহান্নামীরা যখন খাবার চাইবে তখন তাদের সামনে এই দড়ি উপস্থাপন করা হবে এবং তারা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করবে এই দূর্গন্ধ কাটাযুক্ত দড়ি।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র আল কুর-আনে বলেনঃ

দড়ি অর্থাৎ কাটার জাল ছাড়া তাদের অন্য কোন খাদ্য নেই। সেটি তাদের মোটাতাজাও করবেনা এবং ক্ষুধা নিবারনের কাজও আসবে না। (সূরা গাশিয়া আয়াতঃ ৬ থকে ৭)

গিসলিনঃ

দোযখীদের নিকৃষ্ট খাবারের আরেকটি হলো এই গিসলিন। গিসলিন জাহান্নামীদের দেহ থেকে প্রবাহিত রক্ত ও পুঁজের সমন্বয়। অর্থাৎ জাহান্নামীদের রক্ত ও পুঁজের সমষ্টি হলো গিসলিন। এই গিসলি দ্বারা দোযখীদের ক্ষুদা মিটাবে না। 

এই প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ

অতএব আজকের দিনে তার এখানে কোন সুরীদ তথা সুপেয় পানি নেই আর নেই কোন খাদ্য। তাদের জন্য রয়েছে গিসলিন। অপরাধী ছাড়া কেউই সে খাদ্য খাবে না। (সূরা হাক্ক ৩৫-৩৭)

যাক্কুমঃ

জাহান্নামের তলদেশে উৎপাদিত হয়া ফল এই যাক্কুম । এটি একটি বিষধর বৃক্ষের বিষাক্ত ফল। এই ফল অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। এর মাধ্যমে জাহান্নামীদের শারীরিক কোন বিকাশ ঘটবে না বরং তাদের শারীরিক যন্ত্রনা বড়ে যাবে। এই ফলটি জাহান্নামীদের পেটে তামার মতো ফুটতে থাকবে। 

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ

নিশ্চয় যাক্কুম গাছ পাখির খাদ্য হবে। গলিত তামার মতো পেটে ফুটতে থাকবে। যেরকম পানি পাতিলের মধ্যে ফুটতে থাকে। (সূরা দুখান, আয়াত ৪০-৫০)

হামিম, গাসসাক, সদিদ, গাদের মত পানি,দড়ি, গিসলিন, যাক্কুম এইগুলো হলো জাহান্নামের ০৭টি নিকৃষ্ট এবং যন্ত্রণাদায়ক খাদ্য। আমরা আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকে সব সময় জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাইব। বিশেষ করে দৈনিক ০৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে আল্লাহতায়ালার কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাইব আর শয়তানের ধোকা থেকে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। আল্লাহ আমাদের সকল গুনাহ মাফ করুক আমিন।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

google console - How to work in this feature?

মুমিন ব্যাক্তির তিনটি রোগ যা জান্নাতে যাওয়ার পথ সুগম করে দেই। যে তিনটি রোগ আল্লাহ তায়ালার নিয়ামত। Islamic Study Bangla.

Watch YouTube videos without ads. BlogSpot Help Bangla.