জাহান্নামীদের ০৭ ধরনের খাদ্য।। জাহান্নামের ভয়ঙ্কর ও যন্ত্রনাদায়ক খাদ্য।।
সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ
আল্লাহ তায়ালা দোযখ সৃষ্টি করেছেন আল্লাহর বিধান অমান্যকারী, শিরক কারী জুলুম কারী ইত্যাদী বিভিন্ন শ্রেণীর লোক যারা পাপাচার করেছে এবং আল্লাহ তায়ালা ও তার রাসুলের বিরুদ্ধে কথা বলেছে, কাজ করেছে তাদের শাস্তির জন্য। এখানে থাকতে হবে চিরকাল থাকতে হবে।
জাহান্নামের খাদ্য মানে যে তাদের আহার করার বস্তু এমনটা নয়। বরং আল্লাহতায়ালা জাহান্নামীদের খাদ্য, পানি সহ সবকিছুই তাদের শাস্তির জন্য তৈরি করেছেন। এগুলো হলো তাদের শাস্তির অংশ। জাহান্নামের আগুন কখনো নিভবে না। এর অধীবাসিদের চিরকাল আজাব ভোগ করতে হবে। তারা সাহায্য চাইবে, চিৎকার করতে থাকবে কিন্তু কখনো তাদেরকে সাহায্য করা হবে না।
তারা যখন খাবার ও পানি চাইবে তখন তাদের সামনে এমন খাবার উপস্থিত করা হবে যাতে তাদের আজাব আরো বৃদ্ধি পায়। এই খাবার গুলো হবে যন্ত্রনাদায়ক খাবার।
জাহান্নামের খাদ্যগুলোঃ
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র আল কুরআনে জাহান্নামিদের সাত ধরনের খাবারের কথা উল্ল্যেখ করেছেন। সেগুলো হলোঃ
- হামিম
- গাসসাক
- সদিদ
- গাদের মত পানি
- দড়ি
- গিসলিন
- যাক্কুম
খাদ্যের বিবরণঃ
এবং যাদের পান করতে দেওয়া হবে ফুটন্ত হামিম পানি যা তাদের নাড়িভুঁরি ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দিবে। (সূরা মুহাম্মদ আয়াতঃ ১৫)
এই হচ্ছে হামিম ও গাসসাক অঃতপর তারা আস্বাদন করুক। (সূরা সাদ আয়াতঃ ৫৭)
তাদের প্রত্যেকের জন্য পরিনামে জাহান্নাম রয়েছে এবং পান করানো হবে গলিত পুঁজ যা তারা খাওয়ার পরে মৃত্যু যন্ত্রণা অনুভব করবে। কিন্তু তাদের মৃত্যু ঘটবে না। এবং এরর কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে। (সূরা ইব্রাহিম, আয়াতঃ ০-১৭)
এই ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
আমি প্রস্তুত করে রেখেছি অগ্নি। যার বেষ্টনী তাদের পরিবেষ্টন করে রাখবে। তারা পানি চাইলে তাদের দেওয়া হবে গলিত ধাতুর পানি। যা তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে। এটা নিকৃষ্ট পানি। আর জাহান্নাম কত নিকৃষ্ট আশ্রয়। (সূরা কাহফ আয়াতঃ ২৯)
শুনতে আশ্চর্য্য লাগলেও এইটা সত্যি যে জাহান্নামিদের খাওয়ার জন্য দড়ি উপস্থাপন করে হবে। তবে এটা সাধারন দড়ি নয়। এই দড়ি এক ধরনের বিষাক্ত কাটা। এর দ্বারা জাহান্নামীদের ক্ষুধা নিবারণ হবে না। জাহান্নামীরা যখন খাবার চাইবে তখন তাদের সামনে এই দড়ি উপস্থাপন করা হবে এবং তারা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করবে এই দূর্গন্ধ কাটাযুক্ত দড়ি।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র আল কুর-আনে বলেনঃ
দড়ি অর্থাৎ কাটার জাল ছাড়া তাদের অন্য কোন খাদ্য নেই। সেটি তাদের মোটাতাজাও করবেনা এবং ক্ষুধা নিবারনের কাজও আসবে না। (সূরা গাশিয়া আয়াতঃ ৬ থকে ৭)
গিসলিনঃ
দোযখীদের নিকৃষ্ট খাবারের আরেকটি হলো এই গিসলিন। গিসলিন জাহান্নামীদের দেহ থেকে প্রবাহিত রক্ত ও পুঁজের সমন্বয়। অর্থাৎ জাহান্নামীদের রক্ত ও পুঁজের সমষ্টি হলো গিসলিন। এই গিসলি দ্বারা দোযখীদের ক্ষুদা মিটাবে না।
এই প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
অতএব আজকের দিনে তার এখানে কোন সুরীদ তথা সুপেয় পানি নেই আর নেই কোন খাদ্য। তাদের জন্য রয়েছে গিসলিন। অপরাধী ছাড়া কেউই সে খাদ্য খাবে না। (সূরা হাক্ক ৩৫-৩৭)
যাক্কুমঃ
জাহান্নামের তলদেশে উৎপাদিত হয়া ফল এই যাক্কুম । এটি একটি বিষধর বৃক্ষের বিষাক্ত ফল। এই ফল অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। এর মাধ্যমে জাহান্নামীদের শারীরিক কোন বিকাশ ঘটবে না বরং তাদের শারীরিক যন্ত্রনা বড়ে যাবে। এই ফলটি জাহান্নামীদের পেটে তামার মতো ফুটতে থাকবে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
নিশ্চয় যাক্কুম গাছ পাখির খাদ্য হবে। গলিত তামার মতো পেটে ফুটতে থাকবে। যেরকম পানি পাতিলের মধ্যে ফুটতে থাকে। (সূরা দুখান, আয়াত ৪০-৫০)
হামিম, গাসসাক, সদিদ, গাদের মত পানি,দড়ি, গিসলিন, যাক্কুম এইগুলো হলো জাহান্নামের ০৭টি নিকৃষ্ট এবং যন্ত্রণাদায়ক খাদ্য। আমরা আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকে সব সময় জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাইব। বিশেষ করে দৈনিক ০৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে আল্লাহতায়ালার কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাইব আর শয়তানের ধোকা থেকে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। আল্লাহ আমাদের সকল গুনাহ মাফ করুক আমিন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন